বাঁকুড়া জেলার পাঁচটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র----( Top 5 Most Popular Tourist Spot In Bankura)
দু-তিন দিনের জন্য কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে যাওয়া পরিকল্পনা করছেন. লাল মাটির দেশ বাঁকুড়া একবার ঘুরে আসতে পারেন. এই জেলায় রয়েছে বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র. সারা বছরই এই স্থানগুলিতে দেশ-বিদেশের টুরিস্টের ভিড় লেগেই থাকে. আজকের এই প্রতিবেদনে বাঁকুড়া জেলার এইরকমই পাঁচটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রের সম্পূর্ণ বিবরণ তুলে ধরা হলো.
1) বিষ্ণুপুর (Bishnupur)..... লাল মাটির দেশ বাঁকুড়া আজ সারা পৃথিবীর কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে মন্দির নগরী বিষ্ণুপুর এর জন্য. মল্ল রাজাদের রাজধানী বিষ্ণুপুরে রয়েছে প্রচুর টেরাকোটার মন্দির. এখানকার স্থানে স্থানে ছড়িয়ে আছে ইতিহাসের চিহ্ন. প্রাচীন ইতিহাস থেকে জানা যায় মোল্ল রাজা এখানকার জঙ্গলে স্বীকার করতে এসে ঘুমিয়ে পড়েন. তিনি দেবী মৃন্ময়ী স্বপ্নাদেশ পান. দেবীর আদেশ অনুযায়ী রাজা এখানকার বিস্তীর্ণ জঙ্গল পরিষ্কার করে বিষ্ণুপুর নগরের পত্তন করেন. মাটি থেকে প্রাপ্ত দেবী মুক্তি মন্দির করে স্থাপন করেন. মল্ল রাজাদের কুল দেবী মা মৃন্ময়ীর সেই মন্দির আজও বিদ্যমান. মল্ল রাজারা ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের পরম ভক্ত. শ্রীকৃষ্ণের প্রচুর মন্দির তারা এখানে নির্মাণ করেন. বিষ্ণুপুরের দর্শনীয় স্থানগুলি হল.....
A)রাস মঞ্চ..(Ras Mancha) -----বিষ্ণুপুরের স্থাপত্য গুলির মধ্যে অন্যতম রাস মঞ্চ. শহরের মধ্যভাগে এই নিদর্শনটি অবস্থিত. মল্ল রাজ বীর হাম্বীর আনুমানিক 1600 খ্রিস্টাব্দে রাস মঞ্চ নির্মাণ করেছিলেন. রাস উৎসবের সময় শহরের সমস্ত রাধাকৃষ্ণ বিগ্রহ এখানে আনা হতো জনসাধারণের দর্শনের জন্য.1600-1932 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এখানে রাস উৎসব হয়. বর্তমানে এটি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের অধীনে. ্ টিকিট কেটে রাসমঞ্চ এর ভিতরে প্রবেশ করতে হয়. ভিতরে সজ্জিত ফুলের বাগান. পিরামিড আকৃতির স্থাপত্যটি ল্যাটেরাইট পাথর দিয়ে তৈরি. এখানে একশো আটটি দরজা ও চল্লিশটি স্তম্ভ রয়েছে. মন্দির গাত্তে শিল্প কার্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই.
B)গুমঘর (Gumghar) --- রাস মঞ্চ থেকে সামান্য এগোলে দেখতে পাবেন প্রাচীন একটি সৌধ. গুমঘর নামে পরিচিত. সুবিশাল এই স্থাপত্যটি অবাক হয়ে দেখতে হয়. দরজা-জানলা বিহীন এই সৌধটি প্রায় চার তলার সমান উঁচু. এই সৌধ প্রায় 300 বছরেরও বেশি প্রাচীন. অনেকের মতে মল্ল রাজাদের আমলে অপরাধীদের এখানে ফেলে দেয়া হতো. আবার অনেকের মতে এটি রাজবাড়ীর জলের ট্যাঙ্ক ছিল.
C)মৃন্ময়ী মন্দির (Mrinmoyee Mandir) --- গুমঘর থেকে সামান্য এগোলেই মল্ল রাজাদের কুল দেবী মা মৃন্ময়ী মন্দির. আনুমানিক 600 খ্রিস্টাব্দে মল্ল রাজ জগৎমল্ল এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন. আগেই মল্ল রাজাদের রাজধানী ছিল জয়পুরে. বিষ্ণুপুরে ছিল গভীর জঙ্গল. এলাকাটি বন বিষ্ণুপুর নামে পরিচিত ছিল. জগৎমল্ল এই জঙ্গলে শিকার করতে এসে দেখেন এক শিকারী শুকন একটি বকের উপর বারবার ঝাঁপিয়ে পড়ছে আর এক অলৌকিক শক্তি বলে বক টি রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে. রাজা জগৎমল্ল ওই স্থানে অলৌকিক মাহাত্ম্য অনুভব করেন. ওই স্থানের মাটি সরিয়ে তিনি একটি দেবী মুক্তির মুখ দেখতে পান. ওই দেবী মুক্তি নিয়ে তিনি রাজপ্রাসাদের ফিরে যান. রাত্রিবেলা রাজা দেবীর স্বপ্নাদেশ পেলে বর্তমান মন্দিরটি নির্মাণ করেন. রাজপ্রাসাদ বানানো হয় মন্দিরের পাশে. বর্তমানে যা ধ্বংস স্তুপে পরিণত হয়েছে. প্রতিবছর দুর্গ পুজোর সময় প্রাচীন রীতি মেনে মৃন্ময়ী মায়ের পুজো করা হয়. অষ্টমীর দিন সন্ধি পূজার সময় কামান দাগা হয়. আজও এই রীতি চলে আসছে.
D)মদনমোহন মন্দির (Madan Mohan Mandir) -- বিষ্ণুপুরের মন্দির গুলির মধ্যে অন্যতম মদনমোহন মন্দির. এটি একটি বিষ্ণুমন্দির.মল্ল রাজা দুর্জন সিংহ 1694 খ্রিস্টাব্দে এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন. মন্দিরটি পোড়া মাটি দিয়ে তৈরি .মন্দিরের কারুকার্য সত্যিই দেখার মতো.
E) লালগড় প্রকৃতি উদ্যান ( Lalghar Natural Park) --ছিন্নমস্তা মন্দির থেকে বেশ কিছুটা দূরে লাল বাঁধের পাড়ে গড়ে উঠেছে লালগড় প্রকৃতি উদ্যান. আগে এই অঞ্চলে গভীর জঙ্গল ছিল. কয়েক বছর আগে মল্ল রাজাদের প্রাচীন একটি ইঁদারার ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়. এই বিশালাকৃতি ইঁদারা কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পার্ক. শীতকালের এলে প্রচুর মরসুমি ফুলের সমাবেশ দেখতে পাবেন. রয়েছে শিশুদের মনোরঞ্জনের নানা ব্যবস্থা. আর আছে একটি ওয়াচ টাওয়ার. সেখান থেকে চারপাশের জঙ্গল খুব সুন্দর দেখা যায়
F) জোড় মন্দির ( Jor Mandir) ---ছিন্নমস্তা মন্দির এর খুব সামনে রয়েছে জোড় মন্দির . এটি আসলে এক রত্না বিশিষ্ট তিনটি মন্দিরের সমষ্টি.1726 খ্রিস্টাব্দে রাজা কৃষ্ণ সিং এই মন্দির গুলি নির্মাণ করেছিলেন. ল ্যাটেলাইট পাথর দিয়ে এই মন্দির গুলি নির্মিত মন্দির গায়ের শিল্প কার্য অপরূপ. মন্দির তিনটি প্রায় একই রকম দেখতে. দুটি মন্দির বড় আরেকটি মন্দির ছোট. বর্তমানে বিষ্ণুপুর প্রশাসনের উদ্যোগে জোড় মন্দিরের সামনে প্রতি শনিবার পৌষ মেলার আদলে পোড়ামাটির হাট বসে. টেরাকোটার বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে বসে দোকানিরা. আর থাকে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান. মন্দির ঘুরতে ঘুরতে এমন সংস্কৃতি অনুষ্ঠান দেখতে পেলে কার না ভালো লাগে.
G)ছিন্নমস্তা মন্দির(chinnomasta Mandir)-লালবাঁধ ঘুরে কলেজ রোড ধরে চলে আসুন ছিন্নমস্তা মন্দির. মেদিনীপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী কৃষ্ণমোহন গুই দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন. দেবী মূর্তিটি রাজস্থান থেকে আনা. প্রাচীন রীতি মেনে মন্দিরে আজও পুজো হয়ে আসছে. প্রতিদিন নিত্য পূজার পাশাপাশি অমাবস্যা বিশেষ পূজা অর্চনা ব্যবস্থা করা হয় মন্দিরে. মন্দিরের পাশে প্রচুর টেরাকোটা দোকান আছে.
H) দলমাদল কামান (Dalmadal Kaman) --- ছিন্নমস্তা মন্দির এর কাছে রয়েছে দলমাদল কামান. রুপোর বিশালাকৃতি কামানটি বসানো আছে. কামান টির দৈর্ঘ্য 12 ফুট 5 ইঞ্চি আর পরিধি 11 ইঞ্চি. কমানটি তৈরি করেছিলেন জগন্নাথ কর্মকার. বিজাপুরের প্রসিদ্ধ "মালিক - ই- ময়দান" কামান এর অনুকরণে দলমাদল কামান টি তৈরি করা হয়েছে. কমান্ডটি তৈরি করতে তৎকালীন সময়ে এক লক্ষ 25 হাজার টাকা খরচ হয়েছিল. কথিত আছে বিখ্যাত মারাঠা সর্দার ভাস্কর পন্ডিত এখন করলে রাজধানী রক্ষা করার জন্য মদনমোহন কামান দেগে শত্রুর আক্রমণ প্রতিরোধ করেছিলেন
I) শ্যামরাই মন্দির(Shymrai Mandir) ---- 1643 খ্রিস্টাব্দে রঘুনাথ সিং শ্যামরাই মন্দির নির্মাণ করেন. একটি স্তম্ভাকার চতুষ্কোণ ভিতের উপর এ মন্দিরটি নির্মিত. মন্দিরটি গায়ের ভাস্কর্য অসাধারণ. রামায়ণ-মহাভারতের বিভিন্ন কাহিনী মন্দিরের গায়ে খোদাই করা রয়েছে. গান্ধার শিল্পের নিদর্শন এই মন্দিরে লক্ষ্য করা যায়. এই মন্দিরে পাঁচটি চূড়া থাকার জন্য পাঁচচূড়া মন্দির একে বলা হয়. বর্তমানে এই মন্দিরটিও ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের অধীনে.
J) লালবাধ ( Lalbandh) --- 1658 সালে মল্ল রাজ বীরসিংহ লাল্ বাঁধ সহ শহরের বুকে সাতটি বিশাল বাঁধ নির্মাণ করেছিলেন. শহরকে শত্রু আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে ও শহরবাসীর জল কষ্ট মেটাতে বাঁধ গুলি নির্মাণ করা হয়.বাঁধ গুলির মধ্যে লালবাঁধ অন্যতম. লালবাঁধ এর সাথে রাজা রঘুনাথ সিংহ ও লাল বাই এর প্রেম কাহিনী ইতিহাস জড়িত . কথিত আছে এই বাঁধে নাকি মহারানী নির্দেশে লাল বাই কে ডুবিয়ে মারা হয়. সে জন্য এটি লালবাঁধ নামে পরিচিত. গভীর রাতে লাল বাই এর আর্তনাদ নাকি আজ ও শোনা যায়. পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলোয় এখানকার সৌন্দর্য দেখার মত. বর্তমানে লালবাঁধ এ নৌ ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়েছে. লালবাঁধ পারে বিশ্রামের জন্য ছোট ছোট ঘর নির্মান করা আছে. সেখানে বসে আপনি বাড়তি সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন. শীতকালে প্রচুর পরিযায়ী পাখি আসে. বিভিন্ন পাখ-পাখালির কলরব আপনার ক ান কে সিদ্ধ করবে
K) জোড়বাংলা মন্দির ( Jor Bangla Mandir) -- 1655 খ্রিস্টাব্দে মল্ল রাজা রাজনাথ সিং জোড়বাংলা মন্দির নির্মাণ করেন. বিষ্ণুপুরের মন্দির গুলির মধ্যে জোড়বাংলা অন্যতম. দোচালা বিশিষ্ট এই সৌধটি ল্যাটেরাইট পাথর দিয়ে নির্মিত. মন্দির গাহে ধ্রুপদী টেরাকোটার শিল্পকলা নজর কাড়ে. বর্তমানে এটি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের অধীনে. টিকিট কেটে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়.
2) জয়রামবাটি গ্রাম (Jayrambati).... বাঁকুড়া জেলার এই ছোট্ট গ্রাম মা সারদার জন্মভূমি.1853 তাহলে মা সারদা এই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন. এই জয়রামবাটি গ্রাম আজ বিখ্যাত তীর্থক্ষেত্র. মা সারদার বাল্যকালের নয় বছর এখানেই কেটেছে. রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সঙ্গে বিবাহ হয় এ গ্রামে. এখানে আছে মা সারদার পুরাতন ও নতুন বাটি. এখানকার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলি হল.. মা সারদার নতুন বাটি, পুরাতন বাটি, পূর্ণ পুকুর, সিংহবাহিনী মন্দির, মায়ের ঘাট, সুন্দর নারায়ণ ধর্ম ঠাকুরের মন্দির, ভানু পিসির বাড়ি, আমোদর নদ.
3) মুকুটমণিপুর. (Mukutmanipur).... বাঁকুড়ার সীমান্তে অবস্থিত মুকুটমণিপুর আজ পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু. বাঁকুড়া শহর থেকে মুকুটমণিপুর এর দূরত্ব বেশি নয়. এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনমুগ্ধকর. মুকুটমনিপুরের প্রধান আকর্ষণ কংসাবতী বাঁধ.এটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধ. বাঁধটি মুকুটের মতো পাহাড়ের সারি দিয়ে ঘেরা. মনোময় প্রাকৃতি যেন এখানে ফিসফিস করে কথা বলে . 11 কিমি দৈর্ঘ্যের এই বাঁধটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই মনমুগ্ধকর. পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায়ের আমলে কংসাবতী নদীর উপরে এই বাঁধটি তৈরি করা হয়. পুরুলিয়া ,বাঁকুড়া ও মেদিনীপুরের কৃষিকার্যে জলসেচের সুবিধার জন্য এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল. সূর্যোদয়ের সময় সূর্যের আলোয় বাঁধের জল লাল আভায় রঙিন হয়ে ওঠে. ধারে পাহাড়ের বুকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য মনোরম. বাঁধে নৌ ভ্রমণের ব্যবস্থা আছে. চাইলে নৌকায় করে মোহনা ঘুরে আসা যায়. বিকাল বেলায় পড়ন্ত সূর্যের আলোয় নৌ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা এক কথায় অসাধারণ. বাঁধের রাস্তার মুখে কিছু টেরাকোটার দোকান আছে. বাঁধের উপরে রাস্তাটি খুব সুন্দর করে আলপনা আঁকা আছে.
4) শুশুনিয়া পাহাড় ( Susunia Pahar) ..... বাঁকুড়া জেলার পর্যটন কেন্দ্র গুলির মধ্যে অন্যতম শুশুনিয়া পাহাড়. বাঁকুড়া শহর থেকে দূরত্ব মাত্র ৩২ কিমি.এই পাহাড় তার নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য বিখ্যাত. শুশুনিয়া পাহাড় একটি পরিচিত পুরাতাত্ত্বিক ও জীবাশ্ম ক্ষেত্র। এই অঞ্চলে সিংহ, জিরাফ, হায়না ও অন্যান্য অনেক জীবজন্তুর জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম শিলালিপিটি এই পাহাড়েই অবস্থিত. খুব সুন্দর ছোট্ট ঝর্ণা রয়েছে এই পাহাড়ে. এখানকার পাথরের কারুকার্য শিল্প খুব বিখ্যাত. পাথর খোদাই করে বানানো কারুকার্য সত্যিই দেখার মত.
5) ঝিলিমিলি (Jhilimili )..... কংসাবতী নদীর তীরে নিরিবিলিতে সময় কাটানোর আদর্শ স্থান হল ঝিলিমিলি. মুকুটমণিপুর থেকে দূরত্ব মাত্র ১৫ কিমি. প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে. নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যদের জন্য ঝিলিমিলি প্রসিদ্ধ. এখানকার দর্শনীয় স্থানগুলি হল- ১২ মাইল জঙ্গল, সুতান লেক, তালবেড়িয়া বাঁধ,রিমিল ইকো ট্যুরিজম সেন্টার
কখন যাবেন ( When You Go) .... বাঁকুড়া গ্রীষ্ম প্রধান জেলা. গ্রীষ্মকালে এখানে প্রচন্ড গরম পড়ে. এই সময় এখানে না আসাই ভালো. সবচেয়ে ভালো সময় হলো শীতকাল. সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ মাস হল বাঁকুড়া ঘুরতে আসার সবচেয়ে ভালো সময়. পুজোর সময় এখানকার টুরিস্ট স্পষ্ট গুলিতে প্রচন্ড ভিড় হয়.
কোথায় থাকবেন ( Where You Stay) ..... বাঁকুড়া জেলার টুরিস্ট স্পট গুলি দেশ -বিদেশে সমানভাবে বিখ্যাত .এখানকার পর্যটন কেন্দ্র গুলিতে সরকারি ও বেসরকারি প্রচুর লজ- হোটেল আছে. পর্যটন কেন্দ্রগুলির কয়েকটি বিখ্যাত হোটেল ও লজের নাম দেওয়া হল..
বিষ্ণুপুর.... হোটেল অন্নপূর্ণা, হলিডে রিসোর্ট, মুখার্জি লজ, লক্ষ্মী পার্ক, পশ্চিম বঙ্গ সরকারের টুরিস্ট লজ, হোটেল মেঘ মোল্লার. বনলতা( জয়পুর).
মুকুটমণিপুর... ..... রিসোর্ট হাইলাইট,Peerless Resort,WBFDC Nature Resort,Hotel Amrapali, চারুলতা ইকো রিসোর্ট, আরণ্যক রিসোর্ট.
জয়রামবাটী..... হোটেল অনন্যা, মা অন্নপূর্ণা গেস্ট হাউস, হোটেল মহাবীর, কল্পতরু লজ এন্ড হোটেল,
কিভাবে যাবেন ( How To Go) .......... বাঁকুড়া ঘোরার সবচেয়ে ভালো উপায় হল মন্দির নগরী বিষ্ণুপুরে দু-তিন দিনের জন্য থেকে আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলি ঘুরে দেখা. এতে সময় ও পয়সা দুই বাঁচবে. পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের যেকোনো জায়গা থেকে অতি সহজে ট্রেনে বা বাসে বিষ্ণুপুর আসা যায়. হাওড়া স্টেশন থেকে আদ্রা আগামী যেকোনো ট্রেনে বিষ্ণুপুর আসা যায়. কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ট্রেন হল...1) হাওড়া- পুরুলিয়া রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস,2) হাওড়া - পুরুলিয়া এক্সপ্রেস,3) শালিমার - আদ্রা আরণ্যক এক্সপ্রেস,4) হাওড়া চক্রধরপুর এক্সপ্রেস,5) হাওড়া আদ্রা শিরোমনি এক্সপ্রেস.
বাঁকুড়া টাউনে থেকেও দর্শনীয় স্থানগুলি ঘোরা যায় তবে এতে খরচ একটু বেশি হবে. কারণ বাঁকুড়া শহরে তেমন কোন দর্শনের জিনিস নেই.
-----------------------------*******-----------------
আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য লেখা......
1) ইতিহাস ও প্রকৃতির অসাধারণ মেলবন্ধন: অযোধ্যার রাজবাড়ী (Ajodhya Rajbari)
2) ইতিহাস ও ধর্মের অসাধারণ মেলবন্ধন: উজ্জয়নী ( Ujjain)
3)উড়িষ্যার কাশ্মীর :- দারিংবাড়ি (Daringbadi)
0 মন্তব্যসমূহ